সেলিম তালুকদার,শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ
শাহজাদপুরে চলতি সরিষার মৌসুমে এ বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মোট ৯ জন মৌ-খামারী এসেছে। ৯ টি মৌ খামারে ৭৭৫ টি মৌ-বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ যাবৎ মধু উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার কেজি।
সরিষার জমির পাশে মৌ বাক্স থাকলে মৌমাছি পরাগায়নের সহায়তা করে, সরিষার ফলনের হার বেড়ে যায়। আবহাওয়া ভালো থাকলে ২১ মে. টন মধু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শাহজাদপুরে সরিষা মাঠ হলুদ ফুলের সমারোহ। চাষিদের পদচারণায় প্রকৃতি যেমন সেজেছে ঠিক সেই সময় মৌ খামারীরাও মধু উৎপাদনে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসব জমির পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছেন পেশাদার মৌ খামারীরা। ওইসব বাক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি বের হয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাঠে। এ বছর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ১৬ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসলি জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো তিন সপ্তাহ আগেই।
এসব ফুলের মধু সংগ্রহে নেমেছেন পেশাদার মৌ-খামারীরা। তাদের বাক্স থেকে দলে দলে উড়ে যাচ্ছে পোষা মৌমাছি, ঘুরে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে বাক্সে রাখা মৌচাকে। সেখানে সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষা ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপী মৌমছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করে। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করে। এ মৌসুমে মৌ-খামারীরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি আয়ের আশা করছেন।
উপজেলার চর-কাদাই মাঠে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে আসা দিনাজপুর ও রংপুর থেকে মৌ-খামারী শাহ আলম ও ইঞ্জিনিয়ার হাব্বিুল্লাহ জানান- তিনি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পোষা মৌমাছির ৭০ টি বাক্স নিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে শাহজাদপুর এসেছেন। তিনি এ বছর প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পারছেন। এখানে সরিষার ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে তিনি অধীক লাভবান হয়েছেন। পাবনার সাথিয়া থেকে আসা মধু ব্যবসায়ী কবিরাজ আব্দুল মমিন বলেন- শাহজাদপুর অঞ্চলের মৌ বাক্সে উৎপাদিত মধু ও প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত মধুর গুনাগুন একই। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কথা বিবেচনা করলে মৌ বাক্সের মধুই ভালো কারণ মেশিনের মাধ্যমে মধু নিষ্কাশন করা হয়। মধুর মান ভালো হওয়ায় এর কদর সারাদেশে রয়েছে।