
সেলিম রেজা, রায়গঞ্জ প্রতিনিধিঃ
অনুমতি নেই, তবুও দিন কিংবা রাতের আঁধারে প্রকাশ্যেই সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সিএনজি-মাইক্রোবাসে ব্যবহৃত গ্যাস খোলাবাজারে বাসাবাড়ির সিলিন্ডারে বিক্রি করছে তালুকদার ফিলিং স্টেশন। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সচেতন মহল।
সরেজমিন দেখা গেছে, সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত ও কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবৎ সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে তালুকদার ফিলিং স্টেশনে খোলা বাজারে বাসাবাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করে আসছে। এসব ফিলিং স্টেশন থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাইসাইকেল, অটোরিকসা, কাভার্টভ্যান,মোটরসাইকেল এমনকি ট্রাক ভর্তি সিলিন্ডার এনে গ্যাস সংগ্রহ করছে সাধারণ ভোক্তারা। কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছড়াই সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে ফিলিং স্টেশন। সিলিন্ডারভর্তি গ্যাস নিয়ে বিভিন্ন পরিবহনে চলাচল করছে ভোক্তাসাধারণ। সাধারণ ভোক্তারা জানেনও না তারা কতটা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহন করছেন।
মঙ্গলবার রাত ১১.৫০ মিনিটে কিছু যুবক রায়গঞ্জ উপজেলাধীন পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চকনুর গ্রামের তালুকদার ফিলিং স্টেশনে যায় তাদের মোটসাইকেল এর তেলের জন্য, তাদের দেখে তালুকদার ফিলিংস স্টেশনের কর্মচারী দ্রুত গ্যাস সিলিন্ডারটি সরিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেও রেহায় পায়নি। হাতেনাতে ধরা পরে তালুকদার ফিলিং স্টেশনের অবৈধ্য গ্যাস সিলিন্ডারে এলপিজি গ্যাস বিক্রির ব্যবসা। যুবকরা কাজের বাধা দিয়ে থানাতে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে স্বচোখে বসুন্ধরা ১০৪টি গ্যাস ভর্তি, ওমেরা ১২ টি সিলিন্ডার খালি, যমুনা ১০টি গ্যাস ভর্তি, বাকী ৫টি সিলিন্ডার খালি,বেক্সিমকো ২৩টি গ্যাস ভর্তি সর্বমোট = ১৫৪ টি সিলিন্ডার দেখতে পায় ।
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চকনুর গ্রামের পাঙ্গাসী থেকে ধানগড়া রাস্তায় এই তালুকদার ফিলিংস স্টেশনটি বিস্ফোরক আইনের সর্বোচ্চ উপেক্ষা করে মাসে প্রায় কোটি টাকার গ্যাস অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে। অথচ সে ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের নজরদারি নেই বললেই চলে।
এভাবে খোলাবাজারে গ্যাস সরবরাহ ও সিলিন্ডারভর্তি গ্যাস পরিবহনের সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনের শাসন ও জনসচেতনতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত টেলিযোগাযোগের অপারেটর মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা যারা খোলা বাজারে সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রি করছি, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ও আইন পরিপন্থী। আমরাও চাই না অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে।
রায়গঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ ইয়াছিন বলেনঃ একের অধিক গ্যাস সিলিন্ডার কোন দোকানে রাখলে তাকে অবশ্যই বিস্ফোরক ও ফায়ার সাভিসের লাইসেন্স নিতে হবে। অপর দিকে খোলা আকাশের নিচে রেখে সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রি করা মোটেও সঠিক নয়। বর্তমানে বাসা বাড়িতে এসব সিলিন্ডার গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই এখন এ ব্যবসা শুরু করেছেন। শুধু চারঘাটই নয়, পুরো জেলায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রির দোকান। দ্রুত সময়ের মধ্যেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে ট্রাক উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।