নজরুল ইসলাম:
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মনির এখন জামায়াত নেতা।
পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড জামাতের সভাপতির পরামর্শে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি এখন হয়েছেন ইউনিয়ন জামায়াতের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এত দ্রুত খোলস পাল্টে জামায়াতের কমিটিতে তাঁর নাম আসায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হলেও বংশধ্বরের ক্ষমতা ও সম্পদশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এ নিয়ে বিএনপি জামায়াতের ত্যাগী নেতাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ৫ আগস্টের পর খোলস পাল্টে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মনিরের এমন নেতৃত্বে হতবাকও হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এলাকাবাসী। এদিকে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দরা বলছেন স্বৈরাচারী সরকারের আতাত ব্যক্তিরা খোলস পাল্টালেও জামায়াতে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই।
পলাতক নেতাদের কাছে গোপনীয় তথ্য পাচার, হামলা মামলায় সহযোগিতা, নেতাদের আর্থিক সহযোগিতা করে অত্যন্ত সুকৌশলে ৫ তারিখের পর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির এখন ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়ে দাম্ভিকতার সাথে নেতৃেত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বজ্রাপুর গ্রামের সানোয়ারের ছেলে।
জানা যায়, হামলা মামলা থেকে বাঁচতে কৌশলে উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড জামাতের সভাপতি শাহজাহান আলী মন্ডল, মনিরের ছোট ভাইয়ের শশুর উল্লাপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর বিয়াই উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সরকারের পরামর্শে খোলস পাল্টে ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়ে পলাতক নেতাকর্মীদের নানান ভাবে সহযোগিতা করে আসছেন।
নানান সুযোগ সুবিধা নিয়ে আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা থাকাকালে বিএনপি জামায়াতদের নাম শুনতে পারতেন না এক সময়ের দাপুটে এ নেতা। ৫তারিখের পর খোলস পাল্টিয়ে জামায়াতের পদ পেয়ে আওয়ামী দোসরদের হামলা মামলা থেকে মুক্তি দিতে মরিয়া হয়ে উঠছে এই নেতা। এছাড়া থানায় তদবির, পলাতক নেতাদের অর্থ ও তাঁদের পারিবারিক খোঁজ রাখছেন নিয়মিত। অর্থের প্রভাব খাটিয়ে এমন খোলস পরিবর্তনের হতবাক হয়েও মনিরের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না অনেক বিএনপি জামায়াতের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে চুপ থাকলেও রাজনৈতিক চিত্র পরিবর্তন হলে আবারও খোলস পরিবর্তন করে পছন্দমতো নেতা হয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাবেন বলে অনেকেই মনে করছেন।
একসময়ে উল্লাপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরজু নেতার বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হওয়ায় নিজ উপজেলা ও ইউনিয়নে সক্রিয় করে রাখতেন আওয়ামীলীগ নেতা মনির।
নেতাদের মিটিং কিংবা মিছিলে ছিল তাঁর সরব অন্যতম। স্লোগানেও ছিল পারদর্শী। পোস্টার ব্যানার টানানো, মোটর সাইকেল শোডাউন ও লোকজন পাঠিয়ে মিটিং জমজমাট করিয়ে রাখতেন এই নেতা। মিছিলে ও মোটর শোডাউনে লোকজন দিয়ে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের ভয়ে দাবিয়ে রেখার চেষ্টা করতেন মনির। এ কারণে এখন ইউনিয়ন বিএনপি ও ত্যাগী জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।