
মোঃ হোসেন আলী(ছোট্ট)): কালের সাক্ষী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে সিরাজগঞ্জের বড়পুল নামে খ্যাত ইলিয়ট ব্রিজ। শহরের ভূ‚মি থেকে কমপক্ষে ৩০ ফুট উঁচু। প্রায় ১২৫ বছর আগে নিমার্ণকালে এই বড়পুলের নাম ছিল ইলিয়ট ব্রিজ। এই ব্রিজ সিরাজগঞ্জের সবর্স্তরের মানুষের কাছে বড়পুল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। এই ব্রীজটি রক্ষণাবেক্ষণ করে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা। তাই এই ইলিয়ট ব্রিজের ইতিহাস ” সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।
(বুুধবার ( ০৪ জুন) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের কাঁটাখালি উপরে অবস্থিত এই ইলিয়েট ব্রীজটি ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে ব্রিজের পূর্ব পাশে ” ইলিয়ট ব্রিজের ইতিহাস ” সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন কাজের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
এসময়ে পৌর প্রশাসক কামরুল ইসলাম বলেন, সিরাজগঞ্জের মতো এক মফস্বল শহরের বিনোদন কেন্দ্রের অভাব মিটিয়ে আসছে প্রায় শত বছর ধরে। যমুনা নদীর একেবারে কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জ শহর সময়ের সাথে সাথে যে আয়তনে যতটুকু বাড়ার কথা ছিল, বাস্তবে হয়েছে তার অনেক কম। এর বড় কারণ ছিল নদী ভাঙন৷ যমুনার ভয়ঙ্কর ভাঙনে এ শহর বিলীন হবার হুমকিতে পড়েছে বারবার। ফলে এই শহরে বড় তেমন কোনো স্থাপত্য যেমন গড়ে ওঠেনি, শহরও খুব বড় হয়নি। তবে যেটুকু আছে এটি অনেক নাম পেয়েছে এই ব্রীজটি অনেক সুন্দরতম এই ইলিয়েট ব্রীজ ( বা বড় পুল) তাই এর জন্ম ও ইতিহাস মানুষের মাঝে তুলেধরা খুবই প্রয়োজন, তাই ঐতিহ্যবাহী ইলিয়ট ব্রিজ এর ইতিহাস বিলবোর্ড স্থাপন করা হলো ব্রীজটি ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে ব্রিজের পূর্ব পাশে ” স্থাপন করা হলো। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,
শতাব্দির সাক্ষী এই বড়পুল। ১২২ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল এই ব্রিজটি । ১৮৯২ সালে ব্রীজটি নির্মাণকালে প্রমত্তা যমুনার শাখা নদী ছিল সিরাজগঞ্জ শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া এই কাটাখালি নামে মানুষের কাছে অতি পরিচিত এই ইলিয়্রেট ব্রীজটি। ইতিমধ্যে এই ব্রীজকে নতুন সাজে নতুন রুপে সজ্জিত হচ্ছে পৌরসভার পক্ষ থেকে
এর আগে শহরটি নৌকা ছাড়া পাড়াপারেরও কোন সুযোগ ছিলনা। এ নদী দিয়ে তখন চলাচল করতো বড় বড় লঞ্চ-ষ্টিমার এবং বড় বড় পাল তোলা নৌকা। প্রচলিত আছে, সে সময়ে সিরাজগঞ্জের তৎকালীন ইংরেজ মহুকুমা প্রশাসক বিটসন বেল শহরের পশ্চিম পার হতে পূর্ব পাড়ে তার আবাস স্থলে যাচ্ছিলেন, পথে এক বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির আর্তনাদ তার মনকে নাড়া দেয়। তিনি দেখেন লোকটি নদী পার হবার জন্য মাঝির নিকট করুণভাবে আবেদন নিবেদন করছে। কিন্তু মাঝি তাকে বিনা পয়সায় পার করতে নারাজ। বিটসন বেল জানতে পারেন অভাবী ওই মানুষটি তার পুরোদিনের উপার্জন দিয়ে পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী কেনায় তার হাতে কোন অবশিষ্ট টাকা নেই। অপরদিকে নদী পার হতে না পারলে সে বাড়ি পৌঁছাতে পারবেনা।
ইলিয়ট ব্রিজ এর ইতিহাস বিলবোর্ড স্থাপন কালে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা এস এম শাহ আলম, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এ.কে.এম ফরহাদ হোসাইন, প্রমুখ।