
নাবিউর রহমান চয়ন,কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ- সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙ্গে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি। প্রতিকার চেয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ অন্যান্য দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছেন এসএম শামিম হোসেন নামের এক ঠিকাদার। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ২০২৫খ্রিঃ) দুপুরে কাজিপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন কাজিপুর উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে গত মে মাসে তিনি শিক্ষকদের ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ করিয়েছেন। এ সংক্রান্ত পত্রে একসাথে তিরিশ জনের বেশি শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া যাবে না মর্মে উল্লেখ থাকলেও তিনি ষাটজনকে একসাথে প্রশিক্ষণ করিয়েছেন। এবং খরচের টাকা থেকে নিজে অর্থ গ্রহণ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রশিক্ষনার্থী শিক্ষক বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিন্তু চাকুরির ভয়ে কেউ মুখ ফুটে কিছু বলেননি।
শুধু তাই নয় সহকারি শিক্ষা অফিসার তার ক্লাস্টারের আওতাধীন বিদ্যালয়গুলির রুটিন মেরামত, স্লিপের কাজ, ক্ষুদ্র মেরামত ও বিদ্যালয় সংস্কারের মতো নিয়ম ভেঙ্গে কাজগুলো নিজেই করেন। তার নিয়োগকরা ব্যক্তি কাজগুলো করেন। এরফলে ওই কাজের মান যাচাইয়ের আর কোন সুযোগই থাকছে না। তিনি নিজেই কাজের মান সন্তোষজনক বলে লিখিত প্রতিবেদন প্রদান করেন। সম্প্রতি তিনি পদাধিকার বলে তার ক্লাস্টারের বিদ্যালয়গুলোর সভাপতি হয়েছেন। এর ফলে তিনি আরও বেপরোয়াভাবে নিম্মমানের কাজ করছেন তার পছন্দের লোক দ্বারা। এদিকে প্রধান শিক্ষকেরা এই অফিসারের ভয়ে কিছু বলতেও পারেন না।
আবু সাঈদ এসব কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমানের ছত্রছায়ায়। হাবিবুর রহমানের চাকুরির মেয়াদ আর দুইমাস রয়েছে বিধায় এই সহকারী শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তিনি নিজেও আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। তার নিকটে এসব দুর্নীতির অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান এবং সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ শিক্ষকদের সব বরাদ্দেরে থেকে কমিশন গ্রহণ করেন।
লিখিত অভিযোগে শামীম রেজা আরও জানান, গত ২০২৩ সালের কুড়িটি বিদ্যালয়ের কাজ করেন। এই কাজের বিল একলক্ষ টাকা শিক্ষকদের নিকট থেকে নিয়ে নেন সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ। তিনি মাত্র কুড়ি হাজার টাকা প্রদান করেন। বাকি ৮০ হাজার টাকা এখনো পরিশোধ করেননি বলে জানান শামীম রেজা।
সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ ষাটজনের একসাথে প্রশিক্ষণের বিষয়ে বলেন, সময় ছিলো না। তাই এমনটি করেছেন। আর আশি হাজার টাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে জানান, আমি এসবের মধ্যে নেই। এবিষয়ে শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানার জন্য, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হারুনর রশিদের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।