
মোঃ জুবায়ের হোসেন,বেলকুচি উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ কর্তৃক চৌহালীর দুর্গম চরে খামারিকে খুন করে গরু ডাকাতি মামলার রহস্য উৎঘাটন করে ০৭ জন আন্তঃজেলার ডাকাত গ্রেফতার ও ০১টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার(২১ জুন ২০২৫ খ্রিঃ) এক।প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় গত ২০/০৫/২০২৫ খ্রিঃ চৌহালী থানাধীন ঘোরজান ইউনিয়নের মুরাদপুরস্থ যমুনা নদীর কাউলিয়ার চরে ডিসিষ্ট তারা মিয়া(৬৫) ও তার নাতি মোঃ ইব্রাহিম খলিল(১৮), সাং-খাষকাউলিয়া (পশ্চিম জোতপাড়া), থানা-চৌহালী, জেলা-সিরাজগঞ্জদ্বয় বিকাল অনুমান ১৬.৩০ ঘটিকায় গরু দেখাশোনা ও রাত্রি যাপনের জন্য রাতের খাবারসহ উক্ত চরে যায়। একই তারিখ রাত্রি অনুমান ১১.৩০ ঘটিকায় রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দু’জনেই উক্ত টিনের ছাপড়া ঘরে গরুগুলো বেঁধে তারা ঘুমিয়ে যায়। রাত্রি ১২.০০ ঘটিকা হতে সাড়ে ১২ ঘটিকার সময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ঘটনাস্থলে এসে অস্থায়ী ছাপড়া ঘরে প্রবেশ করে এবং ডিসিষ্ট তারা মিয়া ও মোঃ ইব্রাহিম খলিলের হাত, পা, চোখ ও মুখ গামছা এবং রশি দিয়ে বেঁধে রেখে ছাপড়া ঘরে থাকা ০২টি ষাড় গরু ও ০১ টি গাভী গরু নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতদল চলে যাওয়ার পর ডিসিষ্টের নাতি ইব্রাহিম অনেক কষ্টে তার হাতের বাঁধন খুলে উক্ত চরে অস্থায়ীভাবে বসবাসকারী লোকজনকে বিষয়টি জানালে ৪/৫ জন লোক লাঠি-শোটা নিয়ে ছাপড়া ঘরের সামনে আসলে দেখতে পায় যে, ডাকাতদল ডিসিষ্ট তারা মিয়াকে রশি দিয়ে বাঁশের খুটির সাথে বেঁধে রেখেছে। তারা হাত পায়ের বাঁধন খুলে দেয় এবং মুখের ভিতরে দেয়া গামছা বের করে ডিসিষ্ট তারা মিয়াকে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়াশব্দ দেয় না। এতে তারা বুঝতে পারে ডিসিষ্ট তারা মিয়াকে অজ্ঞাতনামা ডাকাতদল রশি দ্বারা হাত ও পা বেঁধে মুখের ভিতর গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গরু নিয়ে পালিয়ে গেছে। এই ঘটনায় চৌহালী থানায় অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ ডাকাতি মামলা রুজু হয়।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশনায় সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শাহজাদপুর সার্কেল মোঃ কামরুজ্জামান, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে মোঃ একরামুল হোসাইন, পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ, এসআই(নিঃ)/মোঃ শারফুল ইসলাম, এসআই(নিঃ)/মোঃ নাজমুল হক, বিপিএম, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জগণসহ অফিসার ও ফোর্সদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কারণে খুনসহ ডাকাতির সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাতদের সনাক্ত করে ০৭ জন আন্তঃজেলা ডাকাত ১। মোঃ ইউসুফ আলী(২৮), পিতা-মৃত ওসমান দেওয়ান, সাং-মুলকান্দিচর, থানা-বেলকুচি, জেলা-সিরাজগঞ্জ, ২। মোঃ শাহ আলম(৪০), পিতা-মোঃ শামসুল হক প্রাং, সাং-শামশৈল, থানা-কালিহাতী, জেলা-টাঙ্গাইল, ৩। মোঃ হাসান মন্ডল(২৫), পিতা-মৃত মকতেল মন্ডল, সাং-চর কুমলি, থানা ও জেলা-টাঙ্গাইল, ৪। মোঃ আমির হোসেন(৪৫), পিতা-মৃত আঃ রহিম, সাং-চর কুমলি, থানা ও জেলা-টাঙ্গাইল, ৫। মোঃ শাহিদ @ সাঈদ(৪১), পিতা-মৃত রজব আলী, সাং-ছোট নলছিয়াপাড়া (চরচন্দনী), থানা-ভূঞাপুর, জেলা-টাঙ্গাইল, ৬। মোঃ আঃ মালেক(২৮), পিতা-মৃত হবিবর রহমান, সাং-খয়াপাড়া, থানা ও জেলা-সিরাজগঞ্জ, ৭। মোঃ ইসমাইল ব্যাপারী(৫৩), পিতা-মৃত আছের উদ্দিন, সাং-ধুলবাড়ী, থানা ও জেলা-টাঙ্গাইলগণদের গ্রেফতার করেন এবং ০১টি ষাড় গরু উদ্ধার করেন।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে থাকে। গত ২০/০৫/২০২৫ খ্রিঃ তারিখে রাতে ০২টি নৌকায় মোট ১৭/১৮ জন পরিকল্পিতভাবে চরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বের হলে চৌহালী থানাধীন ঘোরজান ইউনিয়নের মুরাদপুরস্থ যমুনা নদীর কাউলিয়ার চরে গিয়ে নৌকা ঠেকায়। চরের অস্থায়ী ছাপড়া ঘরে ১১/১২ জন প্রবেশ করলে গরুসহ ০২জন লোককে দেখতে পায়। ডিসিষ্ট তারা মিয়া ও তার নাতি মোঃ ইব্রাহিম খলিল ঘুম থেকে টের পেলে ডাকাতেরা ডিসিষ্ট তারা মিয়ার মাথায় বারি মেরে তাদের দু’জনের হাত, পা, চোখ ও মুখ বেঁধে রেখে ০৩টি গরু নিয়ে নৌকায় তুলে এবং পুংলী ঘাটে গিয়ে গরু ০৩টি বিক্রি করে ১,২৫,০০০/- টাকায় দিয়ে। পরবর্তীতে জন প্রতি ৫,০০০/-টাকা করে ভাগ করে নিয়ে যে যার মতো চলে যায়।
এঘটনায় গ্রেফতারকৃত ০৭ জন ডাকাতই বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে।