মোঃ জুবায়ের হোসাইন, বেলকুচি উপজেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামে বিষাক্ত ছাতু খেয়ে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এবং আরও দুইজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার (২২ জুন) সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৯টার দিকে বৈলগাছি গ্রামে মোছাঃ নুরজাহান বেগম (৪০), তার ভাগনি মোছাঃ মিথিলা খাতুন (১২) এবং ভাইয়ের মেয়ে শিশু তানহা মনি (২) সকালের নাশতায় ছাতু খায়। ছাতু খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনজনেরই বমি, মাথা ঘোরা ও অচেতনতার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
স্থানীয়রা দ্রুত তাদেরকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পথেই শিশু তানহা মনির মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনকে সদর হাসপাতাল থেকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মৃত তানহা মনির বাড়ি ওই গ্রামেই। তিনি মোঃ আব্দুস সালাম ও মোছাঃ সালমা খাতুনের কন্যা। গুরুতর অসুস্থ নুরজাহান বেগম স্থানীয় মৃত নূর শেখের মেয়ে এবং স্বামী পরিত্যক্তা মিথিলা খাতুন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং নুরজাহানের বোনের মেয়ে। সে বর্তমানে নানাবাড়ি বৈলগাছিতে থেকে পড়ালেখা করছিল।
ঘটনার খবর পেয়ে বেলকুচি সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া এবং এসআই সাইমুন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ মৃত শিশুর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ঘটনাটির তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া প্রাথমিকভাবে শুরু করে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ছাতুর মধ্যে বিষক্রিয়াজনিত কোনো পদার্থ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জানা গেছে, এই ছাতুগুলো গত কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে বাড়ির উপর দিয়ে যাওয়া এক অজ্ঞাত ভ্যানওলার কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি জাকারিয়া
বলেন, বিষাক্ত ছাতু খেয়ে একজন শিশু মারা গেছে এবং দুইজন গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি এবং ছাতুর উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কও দেখা দিয়েছে।