
সেলিম তালুকদার , শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: দুর্নীতিতে ৩ মামলার আসামি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘ ৪ মাস অফিসে অনুপস্থিত থেকেও আছেন বহাল তবিয়তে তার খুঁটির জোর নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা উপার্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলার আসামি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করে দুদক। তবে এসবের থোরাই কেয়ার করেন তিনি, এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন এবং কর্মক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে তার অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিআইও আবুল কালাম আজাদ তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। নামে বেনামে, স্ত্রী সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় করেছেন। তার রয়েছে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের একটি প্রিমিও গাড়ি, এই গাড়ি করেই তিনি পাবনা থেকে প্রতিদিন শাহজাদপুরে যাতায়াত করতেন।
২০১৯ সালে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর থেকে তৎকালীন সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। এসময় তার কার্যালয় কে শাহজাদপুরের সর্বস্তরের দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন। অভিযোগ রয়েছে ২০২১ সালে তার বদলি হলেও তৎকালীন এমপির সুবিধার জন্য তিনি অসাধু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে পুনরায় শাহজাদপুরেই থেকে যান।
২০২২ সালে তিনি বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেলেও এখানকার দুর্নীতির অর্থের লোভে এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০২৪ সালে আবারও শাহজাদপুরে বদলি হয়ে আসেন। তবে পট পরিবর্তনের কারণে তিনি বেশিদিন সুবিধা করতে পারেননি।
পরে দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা কার্যালয়ের তদন্তে শাহজাদপুরের পিআইও আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন ও ছেলে ফজলে রাব্বীর নামে ৪ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার সন্ধান পায়, অথচ তাদের কোন আয়ের উৎস নেই।
পরে এই বিষয়ে গত ১১ই মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বাদী হয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার স্ত্রী মর্জিনা খাতুন ও ছেলে ফজলে রাব্বীর নামে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ ও সম্পদ অর্জনের দায়ে ৩টি মামলা দায়ের করেন।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, পিআইও আবুল কালাম আজাদের কারণে আমি নিজেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি আশা করছি এই পরিস্থিতির দ্রুত অবসান হবে।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।