
ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে এটিওদের ব্যাকমেইল করে একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে বিভিন্ন শিক্ষকদের নিকট টেক্স করে টাকা দাবি করছে একটি চক্র।
গতকাল শনিবার থেকে আজ (১৭ নভেম্বর) রোববার পর্যন্ত দুইজন সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে বিভিন্ন শিক্ষকদের নিকট টাকা চেয়ে চিরকুট প্রদান করছে। এছাড়াও একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিভিন্ন ভাবে পুলিশের ভয়-ভীতি দেখিয়ে দেখিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করার চেষ্টা করেন।
হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকের শিকার সহকারী শিক্ষা অফিসাররা হলেন, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১নং ক্লাসটারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোছা দিলরুবা ও ভাটিয়ারী ক্লাসটারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার দেবনাথ।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার দেবনাথ বলেন, আমাকে গতকাল শনিবার দুপুর ২ টার দিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে এস আই আনোয়ার নামে এক প্রতারক চক্র ফোন করে বলেন আপনার ফোন মনে হয় বাচ্চারা ব্যবহার করে যে কারণে এলোমেলো চাপ লেগে, আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারটা আমাদের গ্রুপে অ্যাড হয়ে গেছে। এটি থেকে লিভ নিতে হলে ৬ ডিজিটের একটি কোড যাবে আপনি আমাকে ৬ ডিজিটের কোড বললে আমি গ্রুপ থেকে লিভ করিয়ে দিতে পারব। পুলিশের পরিচয় দেওয়ায় সহজ সরল মনে ৬ ডিজিট কোড টা আমি তাকে বলে দেই এবং পরবর্তীতে জানতে পারি আমার বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষকদের নিকট ০১৬১১২৫৬২৩৯ পেরণ করে ১০ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত টাকা দাবি করছে। আমি নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় গেলে তারা একদিন অপেক্ষা করতে বলেন, এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে পরবর্তীতে অভিযোগ প্রদান করতে বলেন।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোছা দিলরুবা বলেন, আমাকে আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে এসআই মারুফ পরিচয়ে ফোন দিয়ে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ভিপিএন অন করেছিলেন, যে কারণে আপনার জটিলতা দেখা দিয়েছে আপনার ফোনে ৬ ডিজিটের ওটিপি যাবে আপনি আমাদের বললে আপনার আর কোন সমস্যা হবে না। আমি অটিপি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারি আমার হোয়াটসঅ্যাপটি হ্যাক হয়েছে এবং ০১৮২৩১৪২৫৩১ নাম্বার থেকে বিকাশ করতে বলছে।
এছাড়াও ছাব্বিসা বহুলী ক্লাসটারে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আফরোজ জাহান শিমুল বলেন, আমাকেও কক্সবাজার পুলিশের এসআই মাসুম পরিচয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ওটিপি চেয়েছিলন আমি প্রতারক বলার সাথে সাথে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার, শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারদের পুলিশ পরিচয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে বিভিন্ন শিক্ষক এবং বন্ধু-বান্ধবদের নিকট টাকা দাবি করছে এ বিষয়ে সদর থানায় সকলের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ প্রদান করা হবে।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, আমার কাছে অভিযোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনিগত ব্যবস্থা নেব।
নাম্বারগুলো অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তাদের হোয়াটসঅ্যাপের ফটো কাভারে পুলিশের ছবি রয়েছে। সদর উপজেলার সকল শিক্ষকরা এই সমস্ত সকল প্রতারকদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।