
সিরাজগঞ্জ সংবাদ প্রতিবেদক:
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় অভিযুক্তর গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তিনি নিজেকে ধোয়া তুলসীপাতা বানাতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরসহ সাংবাদিক মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছন।
সংবাদে ২নং ওয়ার্ডে শিক্ষক আব্দুর রহমানকে মুঠোফোন ও বক্তব্য যাচাই করনে সকালে সরজমিনে যান ওমর ফারুক। পরে কোন উপায় না পেয়ে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন বলে একাধিকসূত্রে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ ও জন্ম সনদ সংশোধনে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নিয়মিত ভাবে বেতন বাদে মাসে লাখ দুয়েক টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় ও অন্যান্য ইউপি কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে অবৈধ অর্থ আয়ের সুযোগ সৃষ্টিতে নিরব ভূমিকা পালন করছে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি প্রশাসক আনোয়ার সাদাত।
জানা যায়, সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক দেশে জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনা ফি-তে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, শিশুদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পঁচিশ টাকা ও পাঁচ বছরের উর্ধ্বে সকল বয়সী নাগরিকের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ টাকা এবং জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে একশ’ টাকা ফি নির্ধারিত থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রত্যেকটিতে দ্বিগুণ হারে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের সেবাগ্রহীতারা। এছাড়া জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ১নং ধামাইনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শিয়ালকোল নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত পরিষদ কর্মস্থল হওয়ায় আত্মীয় স্বজন নিয়ে একটি বাহিনী গড়ে তুলে দাম্ভিকতার সহিত পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন নাম না বলা শর্তে একাধিক ইউপি সদস্যরা জানান। এ নিয়ে ইউনিয়ন জুড়ে বইছে নানান আলোচনা সমালোচনা। নাম না বলা শর্তে এক ইউপি সদস্য জানান, চেয়ারম্যান চলে যাওয়ার পর সচিব ফারুকের গুন্ডা বাহিনীর ভয়ে অফিসে যেতে পারেনি। প্রশাসক নিয়োগ হওয়ায় এখন যেতে পারি। তাঁকে ঘিরে যে বাহিনী গড়ে উঠেছে যাবতীয় কার্যক্রম তাদের দিয়েই এখনো অনেক কাজ করানো হচ্ছে।
জন্ম নিবন্ধন করা তাসলিমা খাতুন বলেন, সার্ভার সমস্যার কারনে ১৫দিন পর আমার সন্তানের জন্ম নিবন্ধন হাতে পেলাম। তবে অন্যান্য পরিষদের চাইতে নানান টালবাহানা করে প্রত্যেক জন্ম নিবন্ধনগুলোতে ৫০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা নিচ্ছে। নিজ গ্রামে তাঁর চাকুরি হওয়ায় সচিবের ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। পরিষদে জন্ম নিবন্ধন করতে আসা শ্যামপুর গ্রামের শিক্ষক আব্দুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে আমার ও স্ত্রীর জন্ম নিবন্ধন করতে হয়েছে। ৩টি জন্ম নিবন্ধন ১২৫টাকার স্থলে ৪৫০টাকা দিতে হয়েছে। তারপরেও সচিবের দুর্ব্যবহার দেখে তিনি মর্মাহত হন বলে প্রকাশ করেন। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা ইউসুফ বলেন, বাইরে থেকে জন্ম নিবন্ধন করলে আমরা তা গ্রহন করি না। প্রত্যেক আবেদন ফি ৫০ টাকা করে সচিব নির্ধারন করে দিয়েছে।
জন্ম মৃত্যু বয়স সংশোধনে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষরা জানে। এখানে বাড়তি টাকা নেওয়া হয় না। শুধুমাত্র সংশোধনের জন্য ১০০টাকার স্থলে ১৫০ টাকা নেওয়া হয়। বাড়তি টাকা আদায়ে নীতিমালা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।