
সিরাজগঞ্জ সংবাদ প্রতিবেদকঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু খেজুরের গুড়। চলনবিলের সুস্বাদু খেজুরের রস ও গুড়ের মৌসুম চলছে এখন। পৌষ-মাঘের ভরা মৌসুমে সু-স্বাদু খেজুর গুড় তৈরিতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তাড়াশ উপজেলার খেজুর গুড় উৎপাদনকারী গাছিড়া।
শীত মৌসুমের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গাছিরা স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে খেজুরের গাছ লিজ নিয়ে এই গুড় তৈরি করেন।এই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে গাছিদের তৈরি করা গুড় কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ব্যাপারিরা। একই সঙ্গে পিঠা তৈরিকে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়িগুলো আনন্দ উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠেছে। আর পুরো শীত মৌসুম জুড়ে চলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম। বাড়ির উঠানে শীতের সকালে খেজুরের রস আর মুড়ি খাওয়ার আনন্দ চিরায়ত বিষয়। খেজুরের গুড় স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার প্রত্যন্ত দেশীগ্রাম, তালম, মাধাইনগর, ওয়াসিন, সগুনা ও সদর ইউনিয়নের রাস্তা বা পুকুরপাড়ে শত বছরের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৩০ হাজার খেজুর গাছ। এই এলাকাগুলোতে প্রতি বছরেই রাজশাহী ও নাটোর থেকে গাছিড়া ছুটে আসেন খেজুর রসের গুড় তৈরি করার জন্য। রাজশাহী-নাটোরের গাছিদের পাশাপাশি স্থানীয় গাছিড়াও অগ্রহায়ণ মাস থেকে খেজুর গাছ ইজারা নিয়ে গাছ পরিস্কার, চুলা তৈরিসহ রস সংগ্রহের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেন।
গুড়ের মান ও স্বাদ ভালো হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সঠিকভাবে বাজারজাতকরণের অভাবে খুব বেশি লাভের মুখ দেখছেন না গুড় চাষিরা। শীত এলেই বৃহত্তর চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যস্ত হয়ে পরে গাছিরা। গাছ থেকে খেজুরের রস এনে তা মাটির তৈরি বিশেষ চুলায় জাল দিয়ে তৈরি করা হয় খাঁটি মানের খেজুরের গুড়। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই চোখে পড়বে এমন দৃশ্য।
উপজেলার এক গুড় চাষি জানান, বাজারে ভেজাল গুড়ের সয়লাভের পাশাপাশি সঠিক বাজারজাতকরণের অভাবে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না তারা। আরেকজন গুড় চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিন দিন এই অঞ্চলে গুড়ের উৎপাদন বাড়ছে। আর এর মান ধরে রাখতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ অঞ্চলে উৎপাদিত গুড় কিনতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসেন। তাই উৎকৃষ্ট মানের গুড় তৈরিতে নিয়মিত গাছিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।