
নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জ- নলকা আঞ্চলিক মহাসড়কের দিয়ার বৈদ্যনাথ এলাকায় সড়কের ওপর একাধিক স্থানে নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখায় জনদুর্ভোগে সৃষ্টি হয়েছে। এতে মহাসড়কটি সংকুচিত হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি ওই স্থানে বালুবাহী এটি ট্রাক চাপায় স্থানীয় শিবনাথপুর গ্রামের গোলাম মোস্তাফার ছেলে সাঞ্জিত হোসেন (২২) মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে প্রতিনিয়ত আহত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত প্রায় তিন মাস ধরে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের সার্কিট হাউস ও আলেয়া জেনারেল হাসপাতালের পাশে, বহুতল বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আশা অফিস নির্মান, বৃহস্পতি আবাসনের ফরচুন টাওয়ার এর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। শুরু থেকেই তাদের নির্মাণ সামগ্রী মহাসড়কের ওপর ফেলে রাখেছেন। আবার শহীদ এম মনসুর আলী হাসপাতালের সামনে ইট, বালু, খোয়া রাস্তায় ফেলে অবাধে বিক্রি করছেন। পাশেই আরও দুটি নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী মহাসড়কের ওপর বাস, রোলার মেশিন রাখায় দিনেরাতে ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে শনিবার (১ফেব্রুয়ারী) বিকালে ওই মহাসড়কের দিয়ার বৈদ্যনাথ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একাধিক স্থানে ইট,বালু ও পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছে। যে কারণে ওইসব স্থান গুলোতে মহাসড়কটি সংকুচিত হয়ে এক লেনে পরিনত হয়েছে। বিভিন্ন ধরণের যানবাহন গুলোকে এই মহাসড়কে চলাচলের সময় গতি নিয়ন্ত্রণ করে চলতে হচ্ছে।
স্থানীয় দিয়ার বৈদ্যনাথ এলাকার বাসিন্দা ইমান আলী ও শিয়ালকোল ইউপি সচিব ওমর ফারুক বলেন, কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে একটি মহল প্রতিনিয়ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কটির ওপর নির্মাণ সামগ্রী রেখেই চলেছে। যে কারণে এখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়ভাবে তাদের আমরা নিষেধ করলেও কোন লাভ হচ্ছে না। কাজেই এ বিষয়ে দ্রুত কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত সাঞ্জিত হোসেনের চাচাতো ভাই রুবেল আহমেদ বলেন, যে সকল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী আঞ্চলিক মহাসড়কটিতে জমা করে রাখার কারণে আমার ভাই সঞ্জিত হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাদের বিচার দাবি করছি।
ওই স্থানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত স্থানীয় শিলন্দা গ্রামের মোহাম্মদ সাজুর(২২) বাবা আবদুল জলিল বলেন, মহাসড়কে ওপর নির্মাণ সামগ্রী রাখায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এ যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় শিয়ালকোল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুস সালাম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে মহাসড়কটির ওপর নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখায় জন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। এনিয়ে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। যারা বেআইনিভাবে মহাসড়কের ওপর নির্মাণ সামগ্রী রেখেছেন আমরা সেই সব ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
বৃহস্পতি আবাসনের ফরচুন টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের অংশিজন আবদুল হালিম বলেন, পাশে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সাময়িক সময়ের জন্য এই নির্মাণ সামগ্রী মহাসড়কের ওপর রাখা হয়েছে। দ্রুতই এগুলো অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তা আমাকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।