
নজরুল ইসলাম:
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিকটবর্তী আত্মীয় জেলহক (৫৫), নাসিম রেজা (৩২)গংদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে সাইফুল ও তাঁর দুই পুত্রের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ভুক্তভোগী জেলহক শর্ত সাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন এবং অন্য আরেকটি মামলায় জেলহকসহ অন্য আসামীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ভুক্তভোগীর পরিবার তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে সঠিক বিচারের আশ্বাসে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সলঙ্গা থানার সুজাপুর এলাকার মৃত মর্তুজ আলী খানের ছেলে জেলহক খান (৫৫), তাঁর পুত্র সেলিম (২৮), আব্দুর রশিদ (৬০) তাঁর পুত্র নাসিম(৩২), অসিম (২৮)সহ ১১জনের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন একই এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম খান ও তাঁর পুত্র সবুজ খান। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আট জনের নাম উল্লেখ করে আত্মীয় স্বজনদের স্বাক্ষী তৈরি করে চলতি বছরের মার্চ মাসে ১তারিখে সাইফুল ইসলামের পুত্র সবুজ আরেকটি মামলা করেন। যার নম্বর ৩/৪৪, জি,আর- ৪৪/২৫ (সলঙ্গা), পিটিশন ন- ১৯/২০২৫। এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখে সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১নং আসামী জেলহক, ২নং জহুরুল ৩নং সেলিমসহ ৬জনের উল্লেখ করে সলঙ্গা আমলী আদালতে মামলা পিটিশন দায়ের করে। স্বাক্ষী হিসেবে চলতি বছরের মামলার বাদী পুত্র সবুজকে স্বাক্ষী রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলহককে হাজত খাটানো হয়।
এলাকার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, নিজ স্বার্থে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতে মামলা করে থাকেন সাইফুল। ছোট বিষয়কে বড় করাই কাজ। একারনে এলাকার কোন মানুষের সাথে তেমন সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আনছার মোল্লা বলেন, এদের মধ্যে কি দ্বন্ধ আছে আমি সঠিক জানি না। তবে জেলহক, হেলালরা সঠিক বিচারের আশ্বাসে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। সাইফুলের করা সিন্ডিকেট থেকে রক্ষা পেতে চায়। সুযোগ পেলেই বাকবিতন্ডা থেকে দলবল নিয়ে এসে মারামারি করে। এমনকি অর্থ দিয়ে গুরুত্বও সনদ নিতে দ্বিধা করে না। শারীরিক ও লাঞ্চনার মাধ্যমে এবং ন্যায় বিচার থেকে নিজে ভিকটিম সেজে অপরের ক্ষতি করাই সাইফুলদের কাজ।
মিথ্যা মামলার বিষয়ে সাইফুল ইসলাম ও তাঁর পুত্র সবুজ বলেন, আদালতে যে মিথ্যা মামলা করেছি, সে মিথ্যা মামলা প্রমাণ করুক।
মামলার বিবাদীরা বলেন, বাদী সাইফুল ও তাঁর পুত্র সবুজদের বাড়ীর পাশে আবাদী জমি দীর্ঘদিন যাবত চাষাবাদ করে আসছেন। চাচা ভাতিজা ও আত্মীয় হওয়ায় অনেক আগে এজমালি সূত্রে জেলহকগং ভোগ দখলে আছেন। একপর্যায়ে ওই জমি দখল নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় বাকবিতন্ডা শুরু করেন সাইফুল। রাজী না থাকায় নানাভাবে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে সাইফুল বাদী হয়ে ২০২২ সালে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ২২দিন জেল খাটতে হয় জেলহককে। এরপরে চলতি বছরে সাইফুলের পুত্র সবুজ বাদি হয়ে আরেকটি মামলা করেন। চলতি বছরে ২১ জানুয়ারী সাড়ে ১২টার দিকে গরু জবাইয়ের ছুড়ি দিয়ে বিবাদী নাসিম সজিবের মাথার বাম পাশে কানের পিছনে কোপ মারে। পরে আরেক আসামী অসিমের হাতে থাকা দাড়ালে ছুঁড়ি দিয়ে একই জায়গায় আবার আঘাত করা হয়েছে বলে মামলার এজাহার ও আরজিতে উল্লেখ আছে। এছাড়া সনদে ৪টি স্থানে আঘাত করার কথা উল্লেখ আছে। এতে প্রাথমিক বিবরনী ও আরজিতে দুরকম লেখা দেখা যায়। এছাড়া ওই সময়ে সাইফুলের সাথে দস্তাদস্তি হওয়ায় তিনিও চিকিৎসা শেষে গুরুত্বর সনদ নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা যায়। এদিকে সাইফুল ও তাঁর পুত্রদের দ্বারা বারবার মিথ্যা মামলা করা থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তাঁর পরিবার।