
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর এলাকার শিয়ালকোল ব্রিজ থেকে শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে। সেই খালে খনন কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। দীর্ঘ ৫০ বছর পর খালটি পুনরুদ্ধার হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়তো। ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট ও হাটবাজারে দেখা দিত ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এ অবস্থার স্থায়ী সমাধানে শিয়ালকোল-পশ্চিম ভূঞাপুর সংযোগ খালটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এক সময় শিয়ালকোল হাট থেকে পশ্চিম ভূঞাপুর হয়ে খালটি লৌহজং নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। ঐতিহ্যবাহী শিয়ালকোল হাট ছিল তৎকালীন সময়ে একটি ব্যস্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র, যেখানে বড় বড় নৌকা চলাচল করতো এ খালের মাধ্যমে। কিন্তু কালের বিবর্তনে খালটি ভরাট হয়ে যায় এবং একে একে দখল হয় দুই পাড়। কোথাও কোথাও বহুতল ভবন নির্মাণ করায় খালের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যায়।
দীর্ঘদিনের এ অব্যবস্থাপনার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশবাদীরা। তাদের দাবি, বিভিন্ন সরকারের আমলে প্রশাসনের অবহেলা ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় খালটি দখল হয়ে যায়। ফলে ভূঞাপুর বাজার, ঘাটান্দি, ফসলান্দি, এবং আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়ে ওঠে নিত্যদিনের দুর্ভোগ।
স্থানীয় কৃষক সোনা উল্লা বলেন, ‘বর্ষা এলেই আমাদের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যেত। পানি দীর্ঘদিন থাকায় জমির মাটি নষ্ট হয়ে যেত।’
আলী হোসেন আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি এলেই বাসা থেকে বের হতে পারতাম না। আমাদের এলাকা এখন মুক্ত বাতাস পাবে। এতদিন যা শুধু দুর্ভোগ ছিল, এখন তা উন্নয়নে রূপ নেবে।’
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় এ খালটি উদ্ধার করা হলো। পর্যায়ক্রমে আমরা সকল দখলকৃত খাল উদ্ধার করবো।’
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আবু আব্দুল্লাহ খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালটি বেদখল ছিল। যার জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। জনদুর্ভোগ কমাতে আমরা খাল খনন করি। এছাড়াও খালের পাশ দিয়ে আমরা গাছ লাগাবো যাতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়।