শনিবার, ৩১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
শাহজাদপুরে শহিদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ
এনায়েতপুর নাতনিকে হত্যার দায়ে নানি গ্রেফতার
সিরাজগঞ্জে দীর্ঘ আট বছর পর অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে ছাত্রশিবির
সিরাজগঞ্জবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন
বিএফএ সিরাজগঞ্জ জেলা ইউনিটের নিজস্ব কার্যালয় শুভ উদ্বোধন
খোকশাবাড়ি ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে হতদরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাউল বিতরণ
৭১ টন সরকারি চাল জব্দ,সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদকসহ ৭ নেতাকর্মী কারাগারে
সিরাজগঞ্জে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ   বার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বই বিক্রি ও বই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
সিরাজগঞ্জে জিয়া পরিষদ ও সোনালী ব্যাংক পিএলসি জেলা কমিটির আয়োজনে  শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এঁর শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ,আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
স্কাউটিং নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে- অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আমিনুল ইসলাম

আজ কবি নজরুলের ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী 

ঢাকা : বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আজ ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী। দিনটি পালিত হচ্ছে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

তিনি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ, মঙ্গলবার, ২৪ মে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্য জীবনের পরতে পরতে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাঁকে। জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। ১৯১৭ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, সাংবাদিক, দার্শনিক ও সমাজচিন্তক। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যার স্থান চিরভাস্বর। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সংগীত প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে আসছে, সমাজ পরিবর্তনের পথ দেখাচ্ছে। 

কাজী নজরুল ইসলাম একটা প্রতিষ্ঠান ও আন্দোলনের নাম, যুগে যুগে এক জীবন্ত আদর্শ। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীত আর দর্শনেও নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে। কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের সূচনা হয়েছিল দারিদ্র্য আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। ছোটবেলায় পিতৃহারা নজরুল মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করেছেন, লেটো গানে অংশ নিয়েছেন। কঠিন জীবনসংগ্রাম তাকে দমাতে পারেনি। তিনি সাহিত্য ও সংগীতের মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য, শোষণ, কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য জীবনের সূচনা ঘটে বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। তৎকালীন প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় তার বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ যা বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি করে নতুন এক ধারা। এই কবিতায় কবি নিজের আত্মাকে রূপ দিয়েছেন এক বিরাট শক্তিতে, যিনি অন্যায়, শোষণ ও ভণ্ডামির বিরুদ্ধে উচ্চারণ করেন সাহসের ঘোষণা।

এই কবিতা কবি কাজী নজরুল ইসলামকে শুধু সাহিত্যের জগতে নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনেও পরিচিত করে তোলে। তার লেখা প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্প ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গণচেতনাকে উজ্জীবিত করে।

কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি প্রায় চার হাজার গান। এসব গান লিখে ও সুর দিয়ে তিনি বাংলা সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর গানে আছে প্রেম, প্রতিবাদ, ধর্মীয় ভাব, আধ্যাত্মিকতা এবং সাম্যবাদের স্পষ্ট প্রকাশ। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর গদ্য সাহিত্যে তুলে ধরেছেন সমাজে বিদ্যমান কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ। তার উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’ ও ‘কুহেলিকা’ প্রগতিশীল চিন্তার ধারক। 

যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রাজবন্দির জবানবন্দি প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থে তিনি সমসাময়িক সমাজ ও রাজনীতির নির্ভীক সমালোচনা করেছেন।

বর্তমান পৃথিবীতে যখন বিদ্বেষ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও বৈষম্য বাড়ছে, তখন তাঁর অমর সৃষ্টি আমাদের জন্য ‘আলোর দিশারি’। কাজী নজরুল বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর দ্যুতি। তাঁর জন্মবার্ষিকী স্মরণ করিয়ে দেয় যে কবির আদর্শ ও ভাবনা আজও প্রাসঙ্গিক। বৈষম্য, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও সামাজিক অবিচার যখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের বিষয়, তখন তাঁর জীবনদর্শন আলো জ্বালাতে পারে।

কবিতার জন্যে জেলেও যেতে হয়েছিল কবিকে। ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য নজরুলকে দেওয়া হয় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।

সাহিত্যের পাশাপাশি সংগীত ও চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন নজরুল। নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ধ্রুব’তে অভিনয়ও করেছিলেন। তাই শুধু কবি পরিচয়েই আবদ্ধ নন কাজী নজরুল।

কবি নজরুলকে সপরিবারে ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই মহাবিদ্রোহী ও প্রেমিক পুরুষ। 

‘মসজিদেরই পাশে আমার  কবর দিও ভাই’ গানে ব্যক্ত কবির এ ইচ্ছের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১